অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে শ্বসনিক বস্তুর অসম্পূর্ণ জারণের ফলে সামাণ্য পরিমাণে শক্তি ও বিভিন্ন প্রকার জৈব যৌগ উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি অবাত শ্বসন নামে পরিচিত।
অবাত শ্বসন প্রক্রিয়াটিকে দুভাগে ভাগ করা যায়; যথা-১. গ্লাইকোলাইসিস এবং ২. পাইরুভিক এসিডের অসম্পূর্ণ জারণ।
নিচে এদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো ।
১. গ্লাইকোলাইসিস (যে প্রক্রিয়ায় এক অণু গ্লুকোজ কিছু নির্দিষ্ট এনজাইমের সাহায্যে (EPM পথে) পর্যায়ক্রমিক ধাপে জারিত হয়ে দুই অণু পাইরুভিক এসিডে পরিণত হয়, তাকে গ্লাইকোলাইসিস বলে। এ অধ্যায়টি সবাত শ্বসনের গ্লাইকোলাইসিসের মতোই যেখানে গ্লুকোজ অণু পাইরুভিক এসিডে পরিণত করে।
২. পাইরুভিক এসিডের অসম্পূর্ণ জারণ : গ্লাইকোলাইসিস প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট পাইরুভিক এসিড অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে ইথাইল অ্যালকোহল কিংবা ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয়।
ক. ইথাইল অ্যালকোহল (ইথানল) সৃষ্টি : এটি দুই ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে কার্বোক্সিলেজ এনজাইমের কার্যকারিতায় পাইরুভিক এসিড এক অণু CO, বের করে দিয়ে অ্যাসিট্যান্ডিহাইড উৎপন্ন করে এবং দ্বিতীয় ধাপে অ্যালকোহল ডিহাইড্রোজিনেজ এনজাইমের কার্যকারিতায় অ্যাসিট্যান্ডিহাইড, NADH+H+ হতে দুটি হাইড্রোজেন গ্রহণ করে ইথানল (ইথাইল অ্যালকোহল) উৎপন্ন করে এবং NAD মুক্ত হয়ে যায়।
খ. ল্যাকটিক এসিড সৃষ্টি : এ প্রক্রিয়া প্রাণীর পেশিকোষে এবং কিছু ব্যাকটেরিয়ায় দেখা যায়। এতে পাইরুভিক এসিড গ্লাইকোলাইসিসে উৎপন্ন NADH2 থেকে হাইড্রোজেন গ্রহণ করে ল্যাকটিক এসিডে পরিণত হয়। প্রক্রিয়াটি ল্যাকটিক ডিহাইড্রোজিনেজ এনজাইমের সক্রিয়তায় পরিচালিত হয় এবং এতে কোনো CO, সৃষ্টি হয় না।
অতিরিক্ত পরিশ্রমের সময় পেশিকোষে ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন হয়, ফলে পেশি সাময়িকভাবে অবসাদগ্রস্থ হয়ে গড়ে। এ অবস্থাকে পেশির ক্লান্তি বলে। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে কোষ থেকে ল্যাকটিক এসিড নির্গত হয়ে যায়, ফলে পেশি পুনরায় সক্রিয় হয়।
আরও দেখুন...